Showing posts with label অর্থনীতি. Show all posts
Showing posts with label অর্থনীতি. Show all posts

Monday, May 20, 2019

গুরুদাসপুরে ধান চাল ও গম সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধন

গুরুদাসপুরে ধান চাল ও গম সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধন

মো.আখলাকুজ্জামান, গুরুদাসপুর : নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা খাদ্য গুদামে অভ্যন্তরীন গম, বোরো ধান ও চাল সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধন করেছেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক মো. আব্দুল কুদ্দুস এমপি। 
সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলা খাদ্য গুদামে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আচানুল হক আল আমিন, উপজেলা চাউলকল মিল মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ আয়নাল হক তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক আলহাজ সামছুল হক শেখ প্রমূখ।  
উপজেলা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রউফ খান জানান, চলতি অর্থবছরে ২৬ টাকা কেজি দরে ১৮৯ মেট্রিক টন গম, ২৮ টাকা কেজি দরে ২৩৫ মেট্রিক টন বোরো ধান ও ৩৬ টাকা কেজি দরে ৩ হাজার ১১২ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।  গম ক্রয় ৩০ জুন পর্যন্ত হলেও ধান ও চাল সংগ্রহ করা হবে ৩১ আগষ্ট পর্যন্ত।  
উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথি আব্দুল কুদ্দুস এমপি বলেন, এবার সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে গম, ধান ও চাল ক্রয় করা হবে।  সংগ্রহ অভিযানে কোনো অনিয়ম হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। 
‘বালিশ কাণ্ডে’ রূপপুর প্রকল্পে দুই তদন্ত কমিটি

‘বালিশ কাণ্ডে’ রূপপুর প্রকল্পে দুই তদন্ত কমিটি

তদন্তে দু’টি কমিটি গঠন করেছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ভবনের আসবাবপত্র ও বালিশ কেনাসহ অন্যান্য কাজের অস্বাভাবিক খরচ।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব এবং গণপূর্ত অধিদফতর থেকে একজন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর নেতৃত্বে পৃথক এ কমিটি গঠন করা হয়।
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সব ধরনের বিল বন্ধ রাখার জন্য গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। রবিবার বিকেলে মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইফতেখার হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ডেলিগেটেড ওয়ার্ক হিসেবে গণপূর্ত অধিদফতর নির্মাণাধীন ৬টি ভবনে আসবাবপত্রসহ আনুষঙ্গিক কাজের জন্য দাফতরিক প্রাক্কলন প্রণয়নপূর্বক ৬টি প্যাকেজে ই-জিপিতে দরপত্র আহ্বান করা হয়।
প্যাকেজের প্রতিটির ক্রয়মূল্য ৩০ কোটি টাকার নিম্নে প্রাক্কলন করায় অনুমোদন ও ঠিকাদার নিয়োগ দেয় গণপূর্ত অধিদফতর। এক্ষেত্রে দাফতরিক প্রাক্কলন প্রণয়ন, অনুমোদন ও ঠিকাদার নিয়োগে মন্ত্রণালয়ের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। আলোচ্য কাজের বিপরীতে এখনও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে বিল পরিশোধ করা হয়নি।
তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশের আলোকে বাজারমূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে বিল পরিশোধের বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে।
কৃষকের মুখে হাসি ফুটাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধান কিনছেন হবিগঞ্জের ডিসি

কৃষকের মুখে হাসি ফুটাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধান কিনছেন হবিগঞ্জের ডিসি

কৃষকের মুখে হাসি ফুটাতে বানিয়াচং উপজেলায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধান কিনেছেন হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ। আজ রোববার বিকালে খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়ে দোয়াখানি মহল্লার প্রকৃত কৃষক ছবিল মিয়ার বাড়িতে যান। তখন তার কাছ থেকে ২৬ টাকা কেজি দরে দুই টন ধান কেনেন।
এরপর একই মহল্লার কৃষক তগদির মিয়া ও শরীফ উদ্দিনের কাছ থেকে দুই টন করে চার টন ধান কেনেন। ২৬ টাকা কেজি দরে এক মণ ধানের দাম আসে ১ হাজার ৪০ টাকা। জানা গেছে, এ উপজেলায় ১ হাজার ৯০ টন ধান ও ৪ হাজার ৮৫ টন চাল কেনা হবে। শুক্রবার অভ্যন্তরীণ বোরো ধান সংগ্রহের উদ্বোধন করেন এমপি আবদুল মজিদ খান। আর রোববার ডিসি মাহমুদুল কবীর মুরাদ কৃষকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধান কেনা শুরু করেন।
ধান কেনার সময় তার সঙ্গে ছিলেন হবিগঞ্জ জেলা কৃষি বিভাগের ডিডি মোহাম্মদ আলী, হবিগঞ্জ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবদুস সালাম, বানিয়াচং ইউএনও মো.মামুন খন্দকার, এসিল্যান্ড সাব্বির আহমদ আকুঞ্জি, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দুলাল উদ্দিন, খাদ্য নিয়ন্ত্রক খালেদ হুসাইন, খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম। ইউএনও মো.মামুন খন্দকার বলেন, কৃষকেরা যেন ধানের দাম পান ও প্রকৃত কৃষক সরকারের কাছে ধান বেচতে পারেন সে জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা হচ্ছে। একজন কৃষক কমপক্ষে দুই টন ধান বেচতে পারবেন।
কৃষক ছবিল মিয়া ও শরীফ উদ্দিন বলেন, বাজারে ধানের দাম কম থাকায় টেনশনে ভোগেন। সিন্ডিকেটের কবলে পড়ার শংকায় সরকারি গুদামে সরাসরি ধান বিক্রি করতে সাহস করেননি। ডিসি সাব বাড়িতে এসে ধান কেনায় খুব সহজে ধান বিক্রি করতে পেরেছেন।
মণপ্রতি ১ হাজার ৪০ টাকা দরে ধান বিক্রি করে লাভ হয়েছে। তবে ধান কেনার পরিমাণ আরও বাড়ানোর দাবি করেন কৃষকেরা। হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ বলেন, সরকার ধানের যে মূল্য নির্ধারণ করেছে সেই মূল্যে যেন কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি ধান কিনতে পারি সেটা নিশ্চিত করা একটা উদ্দেশ্যে। আর একটা উদ্দেশ্যে হল, সামনে ঈদুল ফিতর উৎসব। অন্যান্য পেশার লোকজন যখন তারা খুশি মনে ঘরে ফিরবে।
আর তখন কৃষকের হাতে যদি অর্থ না থাকে তাহলে কিন্তু কৃষকের জন্য এটি খুব কষ্টের হবে। এজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চেয়েছেন, কৃষকরা যেন খুশি থাকেন। তাদের মুখে যেন হাসি ফুটে উঠে। সেটি বাস্তবায়নের জন্য আমরা সরেজমিন কৃষকের বাড়ি বাড়ি এসে ধান ক্রয় করছি। তিনি বলেন, এভাবে ধান কেনা অব্যাহত রাখার জন্য ইউএনওকে নিদের্শ দেয়া হয়েছে। কারণ কৃষক ভালো থাকলে, সারাদেশ ভালো থাকবে।
সরাসরি কৃষকের ধান কিনতে কৃষি মন্ত্রণালয়ে আইনি নোটিশ

সরাসরি কৃষকের ধান কিনতে কৃষি মন্ত্রণালয়ে আইনি নোটিশ

সরাসরি ন্যায্যমূল্যে কৃষকের কাছ থেকে ধান কিনতে খাদ্য মন্ত্রণালয় ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর একটি আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
আজ রোববার রেজিস্ট্রি ডাকযোগে সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ইমদাদুল হক সুমন এ নোটিশ পাঠান। আগামী তিন দিনের মধ্যে এই পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলে হাইকোর্টে রিট করা হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
নোটিশে কৃষকের কাছ থেকে ন্যায্যমূল্যে ধান ক্রয় করা, চাল আমদানির অনুমতি বাতিল করা এবং চাল রফতানির অনুমতি দিতে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়। পাশাপাশি কৃষকরা যেন ন্যায্যমূল্য পান, সে লক্ষ্যে একটি নীতিমালা তৈরি করতে সরকারকে উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে। নোটিশ পাঠানো আইনজীবী বলেন, ‘দেশে ইরি-বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু ধানের ন্যায্যমূল্য কৃষকরা পাচ্ছেন না। যে কারণে কৃষকরা ধান চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।
ধানক্ষেতে আগুন দিচ্ছেন। আগামীতে ধান চাষ করবেন না বলেও কৃষকরা ঘোষণা দিচ্ছেন। কৃষকরা যদি এমন সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে সেটি দেশের জন্য মঙ্গলজনক হবে না। এটি আমাদের জন্য অশনি সংকেত। এ থেকে উত্তরণের জন্য আমি এ নোটিশ পাঠিয়েছি।’ নোটিশে অতিদ্রুত সরকারের নির্ধারিত এক হাজার টাকা, ১১০০ টাকা ও ১২০০ টাকা মূল্যে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে সরকার এবং সরকারের নির্ধারিত মিল কর্তৃপক্ষকে ধান কিনতে বলা হয়েছে।

Tuesday, April 2, 2019

অভাবে পুত্র সন্তান বিক্রি করলেন বাবা

অভাবে পুত্র সন্তান বিক্রি করলেন বাবা

৫ মাস বয়সী ইয়াছিন নামের পুত্র সন্তান বিক্রি করে দেয়া অভিযোগ উঠেছে বাবার বিরুদ্ধে । অভাবের তাড়নায় দালালের মাধ্যমে ওই সন্তান বিক্রি করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার জাফরগঞ্জ ইউনিয়নের বারুর গ্রামের পূর্বপাড়া মুন্সি বাড়িতে। সোমবার সকালে ওই গ্রামে গিয়ে এর সত্যতা পাওয়া গেছে। ওই বাড়িতে সাংবাদিকদের উপস্থিত দেখে সন্তানকে ফিরে পেতে বুকফাটা আর্তনাদে ফেটে পড়েন ওই হতভাগা ছেলের মা বিলকিস বেগম (৩৫)।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আপনারা আমার সন্তানকে ফিরিয়ে দিন। আমার সন্তানকে আমার স্বামী দালালের মাধ্যমে দুই লাখ টাকায় বিক্রয় করে দিয়েছে। সন্তানহারা বিলকিস বেগম বলেন, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় একটি মাইক্রোবাসযোগে কয়েকজন লোক আসলে, আমার কোল থেকে জোরপূর্বক আমার ছেলেকে ছিনিয়ে নিয়ে তাদের নিকট দিয়ে দেয় আমার স্বামী। আমি অনেক আকুতি মিনতি করেও আমার সন্তানকে আগলে রাখতে পারিনি।
তিনি বলেন, সন্তান দিতে না চাইলে, আমার স্বামী আমাকে মারধর করে সন্তানকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। শুনেছি আমার স্বামী চরবাকর গ্রামের বলিমন্দের বাড়ির নূরুল ইসলামের মাধ্যমে দুই লাখ টাকায় আমার সন্তানকে বিক্রয় করে দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, সন্তানকে কোথায় বিক্রি করেছে জানি না। আমার স্বামী জুয়ারি, জুয়া খেলে এখন প্রায় সর্বশান্ত।
তাই অভাবের তাড়নায় আমার সন্তান বিক্রয় করেছে। যে কোনো কিছুর বিনিময়ে হলেও আমি আমার সন্তান ফিরে পেতে চাই।এদিকে বিলকিসের অভিযুক্ত স্বামী সেলিম মিয়া (৪৫) বলেন, আমাদের বিয়ে হয়েছে ২২ বছর পূর্বে। অভাবের সংসার, স্ত্রী ও ৫ পুত্র ১ কন্যা নিয়ে সংসারের ভরণ-পোষণ খুবই কষ্ট হচ্ছে।
তাই চরবাকর গ্রামের ব্যবসায়ী নূরুল ইসলামের মাধ্যমে আমার সন্তানকে কুমিল্লায় এক নিঃসন্তান পরিবারের নিকট দত্তক হিসেবে দিয়েছি। তবে আমি কোনো টাকা পয়সা নিয়ে সন্তানকে বিক্রি করিনি। আমার সন্তান ভালো থাকবে, লেখাপড়া শিখবে, মানুষের মতো মানুষ হবে। এজন্যই দত্তক দিয়েছি। শিশুটিকে দত্তক দিতে সহায়তাকারী চরবাকর গ্রামের ব্যবসায়ী নূরুল ইসলামের নিকট কোথায় সন্তান দিয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সন্তান বিক্রয় করা হয়নি, ওই পরিবারের সম্মতি নিয়েই কুমিল্লায় এক নিঃসন্তান শিক্ষক পরিবারের নিকট দত্তক দিয়েছি।
তবে ওই পরিবারের পরিচয় সে জানে না, এমনকি নামও জানেন না। তবে একটি সেল ফোন নম্বর দিয়ে বলেন, এটাই আছে। পরে ওই সেল ফোনে যোগাযোগ করে জানা গেছে ভিন্ন কথা। পরিচয় জানতে চাইলে তিনি প্রথমে বলেন, আমি এ বিষয় কিছুই জানি না, আমি কোনো সন্তান নেইনি, যারা নিয়েছে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
কথোপকথনের এক পর্যায়ে তার নাম শামিম আহমেদ, পেশায় শিক্ষক বলে জানান। তিনি বলেন, তার কোনো সন্তান নেই। একটি সন্তানের খোঁজে আছেন অনেক দিন।
তাই তার এক ছাত্র একটি সন্তানের খোঁজ দেন। পরে ওই ছাত্র তার মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেয়। তার মা ও তার ভাই দেবিদ্বার উপজেলার চরবাকর গ্রামের নুরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। শামিম আহমেদ বলেন, নুরুল ইসলাম ওই শিশুটির সন্ধান দেন এবং বাচ্চা নিতে হলে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে বলে জানান।
এত টাকা দিয়ে বাচ্চা কেনার সামর্থ আমার ছিল না। পরে আরো একটি ধনাঢ্য নিঃসন্তান পরিবারের বাচ্চার প্রয়োজন হলে, ওই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি বলেন, ওরা গত ১৬ মার্চ এসে বাচ্চা দেখে পছন্দ করেন এবং কথাবার্তা শেষে গত ২৯ মার্চ ৩শ’ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পের মাধ্যমে কিছু শর্ত সাপেক্ষে (শর্তগুলোর মধ্যে এ বাচ্চা আর কখনো দাবি করতে পারবে না, তার খোঁজখবরও নিতে পারবে না উল্লেখযোগ্য) ৩ জন সাক্ষীর স্বাক্ষর নিয়ে ২ লাখ ৫৫ হাজার টাকা পরিশোধ করে বাচ্চা নিয়ে যায়।
তবে শামিম আহমেদ ওই পরিবারের পরিচয় দিতে অপারগতা জানান, এক পর্যায়ে বাচ্চা গ্রহীতার নাম মঞ্জু, চট্টগ্রামে অডিটর হিসেবে কর্মরত আছেন বলে জানান। তিনি আরও জানান, বাচ্চাটি ভালো থাকবে, ওই পরিবার বিশাল সম্পদের মালিক। ভবিষ্যতে সব কিছুরই মালিক হবে ওই শিশুটি।
নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক ওই বাড়ির কয়েকজন নারী জানান, বাচ্চা বিক্রি করে দেয়ার সংবাদ পেয়ে আমরা বাচ্চাটিকে লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছি, পারিনি।
সেলিম মিয়া আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে এবং তার স্ত্রীকে মারধর করে বাচ্চাটিকে নিয়ে যায়। ওই সময় বাড়িতে কোনো পুরুষ মানুষও ছিল না, যে তাকে বাধা দিবে। তারা জানান, ২২ বছর পূর্বে বিলকিস বেগমের সঙ্গে সেলিমের বিয়ে হয়। তাদের ৫ ছেলে ও ১ কন্যা সন্তান হয়।
বড় ছেলে মো. সবুজ (২০) গ্রামের বাড়িতে থেকে সিএনজি চালায়, আকাশ (১৭) চট্টগ্রামে দাদা-দাদি-চাচার সঙ্গে থেকে সিএনজি চালায়, সাওন (১৪) স্থানীয় একটি দোকানে কর্মচারী হিসেবে আছে, চতুর্থ ছেলে সাওন (৯) এবং এক মাত্র মেয়ে সাথী (১২) স্থানীয় বারুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। আর সর্বশেষ পঞ্চম পুত্র ইয়াছিনকে বিক্রয় করে দেয়া হয়। নাম না প্রকাশের শর্তে এলাকার কয়েকজন লোক জানান, বারুর এবং পোনরা গ্রামে বড় বড় জুয়ার আসর বসে। সেলিমও পাক্কা জুয়ারি আয়ের অধিকাংশ টাকাই জুয়া খেলে শেষ করে। জুয়ায় অনেক টাকা ঋণ হয়ে গেছে সে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল কালাম আজাদ জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি, এটি অতন্ত দুঃখজনক ঘটনা। আমি সবার সঙ্গে কথা বলে বাচ্চাটিকে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করবো। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রবীন্দ্র চাকমা জানান, এ বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। তবে যেহেতু বিষয়টি এখন শুনেছি, তদন্তপূর্বক বাচ্চা উদ্ধারসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

Monday, April 1, 2019

উত্তরা গণভবনের ঐতিহাসিক নিদর্শন ঠিক রেখেই উন্নয়ন-নাটোরের ডিসি

উত্তরা গণভবনের ঐতিহাসিক নিদর্শন ঠিক রেখেই উন্নয়ন-নাটোরের ডিসি




নাটোরের উত্তরা গণভবনের ঐতিহাসিক নিদর্শন ঠিক রেখে উন্নয়ন করা হবে। পাশাপাশি এখানে পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে বৃহৎ পরিকল্পনা নেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। শনিবার নাটোরে জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে উন্নয়ন পরিকল্পনা বিষয়ে উত্তরা গণভবন ব্যবস্থাপনা কমিটি ও স্থানীয় সাংবাদিক ও সুধীজনদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ শাহরিয়াজ এই কথা জানান।। শনিবার নাটোরে জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে উন্নয়ন পরিকল্পনা বিষয়ে উত্তরা গণভবন ব্যবস্থাপনা কমিটি ও স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ শাহরিয়াজ এই কথা জানান।জেলা প্রশাসক বলেন, রাজধানীর বাহিরে নাটোরে একমাত্র প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন উত্তরাগণভবন। এছাড়া দিঘাপতিয়া রাজবাড়ি হওয়ায় এর ঐতিহাসিক নিদর্শন এবং মর্যfদ রয়েছে। যার কারনে উন্নয়ন করতে গিয়ে গণভবনের যাতে সে মর্যদা বা নিদর্শন যেন নষ্ট না হয় সেদিক খেয়াল রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি গণভবন কেন্দ্রিক পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে উন্নয়ন পরিকল্পনার জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কাছে মতামত চাওয়া হয়েছে।




জেলা প্রশাসক আরো বলেন, সম্প্রতি বেশ কিছু গণমাধ্যমে উত্তরা গণভবন নিয়ে বিভ্রান্তিকর কিছু তথ্য দিয়ে সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে। যার কারনে নাটোরের সচেতন মহল, সুধিজনরা ভুল বুঝেছে। তাদের এই ভুল ভাঙ্গাতেই আজকের মতবিনিময় সভা। এছাড়া গণভবনের ভিতরে কোন স্থাপনা নষ্ট করে উন্নয়ন করা হচ্ছে না। যা উন্নয়ন করা হবে গণভবনের বাহিরে। মুল ফটকের সামনে মোটেল, সিনেকমপ্লেক্স, ফুড কর্নার, সুইমিং পোল সহ ৫০ থেকে ৬০ কোটি টাকার একটি উন্নয়ণ পরিকল্পনা গ্রহনের জন্য মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের কাছে মতামত চাওয়া হয়েছে। মতামত পাওয়ার পরবর্তী প্রদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।মতবিনিময় সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ড. রাজ্জাকুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাজেদুর রহমান খান, জজ কোর্টের পিপি অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম, গবেষক ও ইতিহাক সংরক্ষক খালিদ বিন জালাল বাচ্চু, সিনিয়ল সাংবাদিক রনেন রায় সহ বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মী এবং সুধিজনরা। এছাড়া নাটোর সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার জেসমিন আক্তার বানু, দিঘাপতিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওমর শরিফ চৌহান, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোস্তাক আলী মুকুল নাটোরের বিশিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। এরআগে উত্তরা গণভবনের সংস্কারের আগে এবং পরের উন্নয়ণ নিয়ে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন উত্তরা গণভবন ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব এবং এনডিসি অনিন্দ মন্ডল।

Wednesday, April 4, 2018

১৬ নদী ধুঁকছে চলনবিলের

১৬ নদী ধুঁকছে চলনবিলের

ধুঁকছে চলনবিলের ১৬ নদীমো. রাশিদুল ইসলাম, গুরুদাসপুর (নাটোর) সংবাদদাতানাম আছে। অস্তিত্ব নেই। কোথাও সরু খাল। কোথাও কাঁচা পাকা স্থাপনা। কোথাও আবার খনন করা হয়েছে অবৈধ পুকুর। সব মিলিয়ে পানি প্রবাহের কোন ব্যবস্থা নেই। পম পাথুরিয়া থেকে বিলকাঠোর। দীর্ঘ ১৭ কিলোমিটারের এই এলাকাজুড়ে এমন পরিস্থিতি। গুরুদাসপুরের তুলশীগঙ্গা ও মির্জা মামুদ নামের দুটি নদীর বর্তমান অবস্থা এটি। নদী দুটি কেবল মানচিত্র সর্বস্ব হয়ে পড়েছে।
৮০ দশকের শেষের দিকেও এই নদী দুটি ছিল খরস্রোতা। বছর জুড়েই ছোট বড় নৌকা চলাচল করতো। শুষ্ক মৌসুমে নদীর পানিতে কৃষকরা অন্তত ১৫টি বিলে নির্বিঘ্নে চাষাবাদ করতেন। জেলেরা উন্মুক্ত জলরাশিতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু এখন পরিস্থিতি ভিন্ন। নদী দখল হয়েছে। প্রভাবশালীরা নদী ভরাট করে স্থাপনা, দোকান পাট নির্মাণ করেছেন। খনন করা হয়েছে অনেক পুকুরও। মরা নদীতে আর পানি প্রবেশ করে না। বরং বর্ষায় সৃষ্ট পানি নিস্কাশন না হওয়ায় জলাবদ্ধতায় হচ্ছে ফসলহানি।
গুরুদাসপুর ভূমি অফিসের তথ্যে জানা গেছে—উপজেলা চাপিলা ইউনিয়নের পম পাথুরিয়া থেকে শুরু হয়ে খামারপাথুরিয়া, নওপাড়া, তেলটুপি, পুঠিমারি হয়ে রওসনপুর নাজিরপুরের বৃকাশো মৌজায় এসে মির্জামামুদ নদীতে মিলিত হয় তুলশিগঙ্গা নদী। সেখান থেকে ধারাবারিষার সন্তোষপুর, বিন্যাবাড়ি, নারিবাড়ি দক্ষিণ পাড়া, পাঁচশিশা, চলনালী, চরকাদহ, মশিন্দার হাঁসমারি, দরি হাঁসমারি, বামনগাঁড়া, কাছিকাটা হয়ে বিলকাঠোর এস আত্রাই গুমানী নদীতে এসে তুলশিগঙ্গা নদী মিলিত হয়। সিএস নকশায় এমন দেখা গেলেও নদী দুটির ব্যস্তবতা একেবারেই ভিন্ন।
চলনবিলের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত প্রায় ১৬টি নদী এখন মৃতপ্রায়। বর্ষায় আত্রাই, গুমানি, নন্দকুঁজা নদীতে কোনমতে পানি প্রবাহ থাকে। বাস্তবতায় এসব নদীরও পাড় ঘেঁষে স্থাপনা নির্মাণ অব্যাহত রয়েছে।
নদীপাড়ের বাশিন্দারা জানান, নদী খেকোদের প্রভাব, দখল-দুষণ আর ভরাটের কবলে পড়ে আত্রাই, নন্দকুঁজা, গুমানী, বড়ালসহ চলনবিলের প্রধান ১৬ টি নদ-নদী অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে।
চলনবিলের নদী ও খালের মধ্যে রয়েছে—আত্রাই, নন্দকুঁজা, গুমানী, গুড়, করতোয়া, বড়াল, তুলসি চেঁচিয়া, ভাদাই, চিকনাই, বানগঙ্গা ইত্যাদি। ১৮টি খালের মধ্যে আছে—নবীরহাজির জোলা, হকসাহেবের খাল, নিমাইচড়াখাল, বেশানীরখাল, গুমানীখাল, উলিপুরখাল, সাঙ্গুয়াখাল, দোবিলাখাল, কিশোরখালির খাল, বেহুলারখাড়ি, বাকইখাড়া, গোহালখাড়া, গাড়াবাড়ি খাল, কুমারভাঙ্গাখাল, জানিগাছার জোলা, সাত্তার সাহেবের খাল, কিনু সরকারের ধর।
বড়াল রক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়কারী আবু হেনা মোস্তফা কামাল ও মিজানুর রহমান জানান—৮০-র দশকে নদীর উত্স মুখ ও ৪৬ কিলোমিটার ভাটি এলাকার আটঘরিয়ায় স্লুইসগেট নির্মাণ, পাবনার চাটমোহরে তিনটি ক্রস বাঁধ ও স্লুইসগেট নির্মাণের কারণে প্রমত্তা বড়াল বর্তমানে পুকুরে পরিনত হয়েছে। এ ছাড়া চলনবিলের প্রধান নদী আত্রাই,  নন্দকুঁজা ও গুমানীসহ ১৬ টি নদ- নদীতে নৌচলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। 
নাটোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, ‘গঙ্গা ব্যারেজের কারণে উজানে পদ্মা নদীর পানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় বড়ালের নাব্য কমে গেছে। এটি একটি জাতীয় সমস্যা। তবে অবৈধ দখল উচ্ছেদ অভিযান চলমান আছে।’
পানিশূন্য তিস্তা!
গঙ্গাচড়া (রংপুর) সংবাদদাতা জানান—নাব্য হারিয়েছে তিস্তাসহ রংপুর অঞ্চলের প্রায় ৫০টি নদী। হারিয়ে ফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে কৃষি, পরিবেশসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে।
নীলফামারী ও লালমনিরহাট জেলার ডালিয়া ও দোয়ানীতে নির্মিত তিস্তা ব্যারেজের মাধ্যমে শুষ্ক মৌসুমে এ অঞ্চলে কৃষি জমিতে যে সেচ দেওয়ার কথা, তাও অকার্যকর হয়ে পড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে পরিবেশগত ও নৌ-যোগাযোগ ক্ষেত্রে। দেখা দিয়েছে মারাত্মক বিপর্যয়। প্রকৃতি ক্রমাগত ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছে। ফলে এই তিস্তা নদীর পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে পানির স্তর নিম্নমুখী হচ্ছে।
উত্তরের প্রাচীনতম জনপদ রংপুর অঞ্চলে তিস্তা, ইছামতী, ধরলা, করতোয়া, দুধকুমার, জলঢাকা, সতী ঘাঘট, নীলকুমার, বাঙ্গালী, বড়াই, মানাস, কুমলাই, ধুম, বুড়িঘোড়া, সোনাভরী, হলহলিয়া, লহিতা, ঘরঘরিয়া, নলেয়া, জিঞ্জিরাম, ফুলকুমার, কাঁটখালী, সারমারা, রায়ঢাক, যমুনেশ্বরী, চিতনী, মরা করতোয়া, আলাই, ঘাঘট, কুমারীসহ প্রায় ৫০টি নদী এখন মৃতপ্রায়। এসব নদীর নাব্য নেই, কোনো কোনো নদীতে হাঁটুজল। বাংলাদেশের ১১২ মাইল দীর্ঘ তিস্তা শুকিয়ে গেছে।
রিভারাইন পিপলের পরিচালক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, ‘নদীগুলো পুনরুদ্ধার করতে হলে অবৈধ বাঁধ অপসারণ, নদীর তলদেশ খনন ও ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে উত্সমুখ উন্মোচন করতে হবে। কৃত্রিম ক্যানেলের মাধ্যমে ছোট নদীগুলোর সঙ্গে বড় নদীর সংযোগ স্থাপন করা গেলে কৃষিপ্রধান এই অঞ্চলের নদীগুলোতে আবার যৌবনে ফিরবে।’
পদ্মা বাঁচানোর দাবিতে রাজশাহীতে মানববন্ধন
রাজশাহী অফিস ‘পদ্মা নদী বাঁচলে, রাজশাহী বাঁচবে’ স্লোগানে বুধবার রাজশাহীতে মানববন্ধন করেছে সামাজিক সংগঠন রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)। বেলা ১১ টায় রাজশাহী নগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে যৌথভাবে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে পদ্মায় পানির প্রবাহ বাধামুক্ত, রেগুলেটরি কমিশনের মাধ্যমে নদী তদারকি ও প্রতি জেলায় কমিশনের ইউনিটের দাবি জানানো হয়। বাপা রাজশাহী জেলা কমিটির সভাপতি মো. জামাত খানের সভাপতিত্বে মানববন্ধন থেকে অবিলম্বে নদী-নালা, খাল-বিল, পুকুর-ডোবা দখলমুক্ত ও নদী ড্রেজিং এবং প্রস্তাবিত উত্তর রাজশাহী সেচ প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়। একইসঙ্গে পরিবেশ দুষণমুক্ত করারও দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বদিউজ্জামান রবু মিয়া, রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা ডা. আব্দুল মান্নান প্রমুখ বক্তৃতা করেন।

বাড়ছে দুর্ভোগ, পাকা সড়কে কাদা

বাড়ছে দুর্ভোগ, পাকা সড়কে কাদা

সড়ক জুড়ে কাদার পড়ত। কোথাও বড় বড় গর্তে আটকাপড়া পানি। চচকৈড় মধ্যমপাড়া পাকা সড়কে যানবাহন চলাচল করা তো দূরের কথা। পায়ে হাঁটাও দুষ্কর হয়ে পড়েছে। গত রবিবার রাতের বৃষ্টিতে পাকা সড়কটির এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, ইটভাটার ট্রাক্টরে মাত্রাতিরিক্ত ধারণ ক্ষমতায় বহন করা মাটি সড়কে পড়ে। বেশ কিছুদিন ধরে ধুলায় টিকে থাকা দায় হয়ে পড়েছিল। এখন বৃষ্টি হওয়াতে পাকা সড়কটি কাদাময় হয়ে পড়েছে। চলাচলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় কাজে বেড়েছে দুর্ভোগ।
গুরুদাসপুর পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মো. সেলিম রেজা জানান, পৌর সদরের আদম আলী শাহর মোড় হয়ে ধারাবারিষা ইউনিয়নের হাজীর হাট চিত্লাপাড়া দিয়ে আছিরের মোড় হয়ে মধ্যমপাড়া ব্রিজ পর্যন্ত এই সড়কসহ আরো দুটি সড়ক সংস্কারের জন্য প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। কিন্তু মাটি বহনকারী ট্রাক্টর চলাচল করায় সড়কগুলো অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী রতন কুমার ফোজদার জানান, গুরুদাসপুর উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের গ্রামীণ সড়কগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অথচ বছরখানেক আগে গ্রামের সড়কগুলো কার্পেটিং করা হয়েছিল। সড়কে পড়া ট্রাক্টরের মাটি বৃষ্টিতে কাদায় পরিণত হয়েছে। এতে কার্পেটিংয়ের স্থায়িত্ব কমে যাচ্ছে। নতুন করে এসব সড়ক সংস্কারে ব্যয় হচ্ছে ৬০ কোটি টাকা।
গত মঙ্গলবার পৌরসভার চিত্লাপাড়া-হাজীর হাট সড়কে গিয়ে দেখা গেছে, প্রায় ৫ কিলোমিটার সড়কের কার্পেটিং উঠে গেছে। চাঁচকৈড় মধ্যমপাড়া হতে তারাশিয়া পাড়া মাদ্রাসা পর্যন্ত সড়ক কাদায় পরিপূর্ণ। দেখে বোঝার উপায় নেই যে ছয় মাস আগে সড়কটি কার্পেটিং করা হয়েছিল।
চিত্লাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মালেক ও আয়ুব আলীসহ কমপক্ষে ১০ জন অভিযোগ করেন, সারাদিন চলে ট্রাক্টরে মাটি বহন, ট্রাকে ইট-কয়লা পরিবহন। এতে সড়ক হয়ে পড়ে ধুলিময়। রবিবারের বৃষ্টিতে পাকা সড়কের ওপর কাদার পড়ত জমেছে। এতে পায়ে হেঁটে চলাচল করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
গুরুদাসপুর পৌরসভার মেয়র মো. শাহনেওয়াজ আলী জানান, ভারী যানবাহন চলাচলে শুধু সড়কই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না। শুকনোয় ধুলো আর বর্ষায় কাদায় রীতিমতো নাগরিক দুর্ভোগ শুরু হয়েছে। ইটভাটা মালিকদের সতর্ক করেও লাভ হচ্ছে না।
গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনির হোসেন জানান, উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করতে গেলে ইটভাটার দরকার আছে।
গুরুদাসপুর উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মোশারফ হোসেন জানান, প্রায় ২০ বছর ধরে তাদের ইটভাটা চলছে। উন্নয়নের স্বার্থে সাময়িক কষ্ট মেনে নিতে হবেই।
রসুনের দাম কম হওয়ায় দিশেহারা কৃষক

রসুনের দাম কম হওয়ায় দিশেহারা কৃষক

বিলের পর বিল রসুনের আবাদ। এ মওসুমেও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। অন্তত সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে এই আবাদ হয়েছে। কেবল উৎপাদন আর দামেই দেখা দিয়েছে সংকট। বিঘায় উৎপাদন হয়েছে ১০ থেকে সর্বোচ্চ ১৫ মণ হারে। যার বর্তমান বাজার মূল্যে মণ প্রতি ৪শ থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকা।
 
রসুনের ফলন বিপর্যয়ের এ মওসুমে দাম কম হওয়ায় রিতিমতো দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষক। বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ক্ষুদ্র-প্রান্তিক চাষিরা। অনেক কৃষক শুধু রসুন আবাদের জন্যই চড়া মূল্যে জমি বর্গা (লিজ) নিয়ে আবাদ করেছেন। রসুুনের প্রত্যাশিত দাম না পাওয়ায় সেসব চাষী নিঃস্ব প্রায় হয়ে পড়েছেন।
 
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, গত মওসুমেও বিঘায় রসুনের উৎপাদন ছিল ২৫/৩০ মণ হারে। কিন্তু এ মওসুমের চিত্র ভিন্ন। গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর ফলন অর্ধেকেরও নিচে মেনেছে। দামও সর্বনিম্ন। এতে কৃষকরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বেশিরভাগ কৃষক মহাজনী ঋণসহ ব্যাংক এনজিও থেকে চড়া সুধে ঋণ নিয়ে রসুন আবাদ করেছেন। চৈত্র মাসে উৎপাদিত ওই মসলা জাতীয় ফসল কৃষকের ঘরে আসলেও ঋণ পরিশোধের তাগিদে উঠতি সময়ে কাঁচা ভেজা অবস্থাতেই তা বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে ফসলের আমদানি বাড়ায় নায্য মূল্যে থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষক।
 
কৃষকরা জানান, কৃষি উপকরণের দাম বাড়ায়, বেড়েছে উৎপাদন খরচ। খরচের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শ্রমিকের মজুরি। কেবল বাড়েনি কৃষকের কষ্টের্জিত ফসলের মূল্য। এ মওসুমে বীজ বাবদ ৯-১০ হাজার, সার-কীটনাশক বাবদ ৫ হাজার, নিড়ানী বাবদ ২ হাজার, সেঁচ বাবদ ২ হাজার টাকা এবং রসুন উঠানো বাবদ শ্রমিক খরচ হয়েছে ৪ হাজার টাকাসহ কৃষকের সার্বিক ব্যয় হয়েছে ১৮-২৫ হাজার টাকা। এছাড়া ক্ষুদ্র প্রান্তিক চাষীদের একবিঘা জমিতে (বর্গা) লিজ বাবদ ১৪ হাজার টাকা বেশি ব্যায় হয়েছে। এতে প্রতি বিঘায় সার্বিক ২৫-৩৩ হাজার টাকা ব্যায়ে রসুন উৎপাদন হয়েছে ১০-২৫ মণ হারে। অধিক খরচে রসুন আবাদ করেও আশানুরূপ ফলন হয়নি। আকার ভেদে রসুনের বর্তমান বাজার মূল্য প্রতি মণ ৪শ থেকে ১হাজার টাকা পর্যন্ত। এখন দাম কম হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন চাষীরা।
 
সরেজমিনে উপজেলার চাঁচকৈড়, নয়াবাজার ও নাজিরপুরসহ আশপাশের অন্তত দশটি হাট ঘুরে দেখা গেছে, দাম কম হওয়া স্বতেও বহু কৃষক তাদের উৎপাদিত রসুন নিয়ে হাটে এসেছেন। কৃষকরা কেউ কেউ রসুন বিক্রির টাকায় শ্রমিকের মজুরি দেবেন। আবার অনেক কৃষক ঋণ পরিষদসহ প্রয়োজনের তাগিদে লোকসান মেনে নিয়েই কাঁচা ভেজা রসুন বিক্রি করছেন। কৃষকদের এই দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে একশ্রেণির ব্যবসায়ীরা কম দামে রসুন কিনে তা মজুদ করছেন। গত এক সপ্তাহে উপজেলার চাঁচকৈড়, নয়াবাজার, নাজিরপুর, কাছিকাটা, বড়াইগ্রামের মৌখারা, মানিকপুরসহ বেশ কয়েকটি হাট পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে এসব হাটে সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকা দরে রসুন বিক্রি করেছেন কৃষক।
 
চাঁকৈড় হাটে কথা হয় রসুন বিক্রেতা উপজেলার যোগেন্দ্র নগর গ্রামের আব্দুল ওহাবের সাথে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, চলতি মওসুমে অধিক খরচে রসুন আবাদ করেছেন। প্রতিকুল আবহাওয়ার কারণে ফলন ভালো হয়নি। জমিতে অধিক আগাছা থাকায় রসুন উঠাতেও বেশি শ্রমিক খরচ হয়েছে। এখন শ্রমিকের মজুরি দিতেই তিনি কম দামে রসুন বিক্রি করতে এসেছেন। কৃষক মনিরুল ইসলাম, মাসুদ রানা ও প্রান্তিক চাষি আকবর আলী জানান, দাম কম জেনেও তারা হাটে রসুন বিক্রি করতে এসেছেন। ব্যাংক, এনজিও ও গ্রাম্য মহজনের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে ১৫ হাজার টাকা বিঘা জমি বর্গা (লিজ) নিয়ে তারা রসুন আবাদ করেছিলেন।  দাম কম আর ফলন বিপর্যয়ে রিতিমতো এখন তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
 
ফরিয়া ব্যবসায়ী হাফিজ মুক্তার জানান, এই হাটে তিনি আকার ভেদে মণ প্রতি ৬শ থেকে ৭শ টাকায় প্রায় ৩০ মণ রসুন কিনেছেন। কুমিল্লার আব্দুল আলিম, চট্টগ্রামের ঝুনু মিয়া ও ঢাকা থেকে আসা ব্যপারি সিরাজুল ইসলাম জানালেন, তারা প্রত্যেকেই ৫০ মণ করে রসুন কিনেছেন ৬শ থেকে ১হাজার টাকায়। এতে গড়ে প্রতিমণ রসুনের ক্রয় মূল্য ৭২০ টাকা পড়েছে। এই রসুন তারা মজুত করে দাম বৃদ্ধি হলে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করবেন।
 
চাঁচকৈড় হাটের স্থানীয় রসুন ব্যবসায়ী মেসার্স হানিফ ট্রেডার্সের স্বত্বাধীকারী মো. সায়েম ফকির ও নাছিম ভান্ডারে স্বত্বাধীকারী নাছিম আলী জানান, বছরজুড়েই তারা রসুনের ব্যবসা করেন। প্রতিহাটে তারা ১২শ মণ রসুন ক্রয় করেন। পরে সুবিধামতো সময়ে ঢাকা, সিলেট, খুলনায় বিক্রি করেন। ভরা মওসুমেও ফলন বিপর্যয়ের কারনে রসুনের দাম কম। একহাটের রসুন অন্য হাটে বিক্রি করতে গেলে দরপতনের কারনে তাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে।
 
নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, বিগত পাঁচ বছরে প্রতি মওসুমেই রসুন আবাদ লক্ষ্য মাত্রা ছাড়িয়েছে। ২০১২-২০১৩ মওসুমে ১৪ হাজার ৮০ হেক্টর জমিতে রসুন আবাদ করে উৎপাদন হয় ১ লাখ ১১ হাজার ৪৩ মেট্রিক টন। ২০১৩-১৪ মওসুমে ১৭ হাজার ৮শ ৪০ হেক্টর জমিতে রসুন চাষ করে উৎপাদন হয় ১ লাখ ৫৫ হাজার ৮ মেট্রিক টন, ২০১৪-১৫ মওসমে ১৯ হাজার ৫ হেক্টর জমিতে ১ লাখ ৭৩ হাজার ৩ মেট্রিক টন, ২০১৫-১৬ মওসুমে ২০ হাজার ১০ হেক্টর জমিতে ১ লাখ ৭৩ হাজার ৩ মেট্রিক টন, ২০১৬-১৭ মওসুমে ২৫ হাজার ৮শ হেক্টর জমিতে রসুনের আবাদ হয়। সর্বশেষ চলতি মওসুমে নাটোরের ৭টি উপজেলায় রসুন চাষের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছিল ২৫ হাজার ৭শ ৯৫ হেক্টর। তবে লক্ষ্য মাত্রা ছাড়িয়ে ২৮ হাজার ৮০৫ হেক্টর জমিতে রসুন চাষ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে দুই লাখ মেট্রিক টনেরও বেশি।
 
চলনালী গ্রামের কৃষক আব্দুর রহিম (৪৫) জানান, অন্যের জমি লিজ নিয়ে ৩ বিঘা জমিতে রসুন চাষ করেছেন তিনি। প্রতি বিঘা জমিতে রসুন চাষে বীজ, সেঁচ, সার-কীটনাশক, নিড়ানীসহ রসুন উঠানো বাবদ অধিক হারে শ্রমিক খরচ হয়েছে। কিন্তু ফলন হয়েছে বিঘায় ১২/১৪ মণ হারে। দাম কম হওয়ায় উৎপাদন খরচই উঠছে না।
 
মারিয়া গ্রামের কৃষক আব্দুল হাকিম জানান, তিনি ঋণের টাকায় চলতি বছরে ৪ বিঘা জমি রসুন আবাদ করেছেন। রসুনের ফলন বিপর্যয় দামেও প্রভাব ফেলছে। বাধ্য হয়ে কম দামেই কষ্টে অর্জিত ফসল বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে করে ঋণ পরিষদ করে অন্য আবাদ করাই দৃস্কর হয়ে পড়েছে। সরকারীভাবে সহযোগীতা না পেলে তারা সর্বশান্ত হয়ে যাবেন।
 
কৃষি বিভাগের উপপরিচালক রফিকুল ইসলাম ইত্তেফাককে জানান, চলতি বছরে নাটোরের ৭টি উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার তুলনায়  অধিক রসুন চাষ করা হয়েছিল। এখন পর্যন্ত ফলন কম দেখা যাচ্ছে। বর্ষার পানি দেরিতে নামায় কৃষকের রসুন চাষে কিছুটা বিলম্ব হয়। সে সময় বৃষ্টি পাতের কারনে রসুনের ফলন বিপর্যয় ঘটেছে। তাছাতা কাঁচা ভেজা রসুন বিক্রির ফলে বর্তমান সময়ে রসুনের দাম কম যাচ্ছে। যেহেতু ফলন কম হচ্ছে। দাম না বাড়লে কৃষক মাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

Saturday, January 6, 2018

 ১০ গ্রামের মানুষের ভরসা গুরুদাসপুরে বাঁশের সেতু

১০ গ্রামের মানুষের ভরসা গুরুদাসপুরে বাঁশের সেতু

মোঃ রাশিদুল ইসলাম, গুরুদাসপুর (নাটোর) সংবাদদাতা
২৫০ মিটারের একটি বাঁশের সেতু। এই সেতু দিয়েই যাতায়াত করেন কয়েক হাজার মানুষ। ঘাটটি ডাক হওয়ার পর আত্রাই নদীর ওপর সেতুটি নির্মাণ করেছেন স্থানীয় খোকন মাঝি নামের এক ব্যক্তি। সেতুতে পারাপারের জন্য টোল বাবদ দিতে হচ্ছে ফসল অথবা টাকা। গুরুদাপুর উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের সাবগাড়ি আদর্শ বাজার সংলগ্ন আত্রাই নদীর ওপর ওই বাঁশের সেতুর অবস্থান। বর্ষায় নৌকা আর শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সেতুতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ আশেপাশের ১০ গ্রামের মানুষ। স্থানীয়রা জানান, আত্রাই নদীর পূর্বপাড়ে ফকিরপাড়া, বিলহরিবাড়ি, হরদোমা, সাবগাড়ী, কৃষ্ণনগর গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষর বসবাস। এছাড়া প্রাথমিক স্কুল, মাদ্রাসা ও বিলহরিবাড়ি কবরস্থান রয়েছে। পশ্চিম-দক্ষিণ পাড়ে রয়েছে বিয়াঘাট, সাবগাড়ি, বিলদহর ও জ্ঞানদা নগর গ্রাম ছাড়াও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও সাবগাড়ী হাট রয়েছে। আত্রাই নদীর দুই পাড়ের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ ওই বাঁশের সেতুর ওপর  প্রত্যক্ষ ও পরেক্ষভাবে নির্ভশীল। ওই নদী পার হয়ে দুই পাড়ের মানুষ এসব প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে। এছাড়া পূর্ব পাড়ের মানুষের জেলা শহরসহ বিভিন্ন এলাকার সাথে যোগাযোগ রক্ষাকারী মাধ্যমও এটি। তাছাড়া ইরি-বোরো রবিশস্য আবাদ শুরু হওয়ায় পারাপারে চাপ বাড়ছে।
দেখা যায়, নদীটির এপার ওপার জুড়ে বাঁশের সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। মাঝামাঝি পর্যায়ে খানিক জায়গা রেখে সেখানে নৌকা রাখা হয়েছে। ফসলাদি নিয়ে মানুষ ঝুঁকি নিয়েই পারাপার হচ্ছেন। স্থানীয় খোকন মাঝি নামের এক ব্যক্তি খেয়াঘাটটি ইজারা নিয়েছেন। সেতুতে পার হতে স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষেত্রে সদস্য অনুপাতে আধা মণ থেকে একমণ হারে ধান নেওয়া হয়। এছাড়া দূরের এলাকা থেকে আসা মানুষের ক্ষেত্রে বাইসাইকেল দুই টাকা, মোটরসাইকেল পাঁচ টাকা ও মানুষ পারাপারের ক্ষেত্রে পাঁচ টাকা করে নেওয়া হয়।
খোকন মাঝি জানান, ভরা বর্ষায় নৌকায় মানুষ পারাপার করা হয়েছে। এখন পানি কমে যাওয়ায় গ্রামবাসীর কাছ থেকে চাঁদা তুলে এক লাখ ২০ হাজার টাকা ব্যয়ে ২৫০ মিটারের বাঁশের সেতুটি নির্মাণ করেছেন তিনি।
দুর্গাপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ওমর আলী বলেন, নদীর ওপর সেতু না থাকায় পূর্ব পাড়ের বাসিন্দারা বেশি কষ্টে আছেন। প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হয়ে শিক্ষার্থীরা স্কুল-কলেজে আসে। তাছাড়া এখানকার মানুষের নিত্য কেনা-কাটা, জমির ফসল উত্পাদন-বিক্রি ও দেশের অভ্যন্তরে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হয়ে উঠেছে ওই বাঁশের সেতু।
বিয়াঘাট ইউপি চেয়ারম্যান প্রভাষক মোঃ মোজাম্মেল হক বলেন, দেড়বছর আগে সাবগাড়ি বাজারে সেতুর দাবিতে একটি বৈঠক হয়েছিল। সেই বৈঠকের দাবি সংবলিত একটি কপি স্থানীয় সংসদ সদস্যকে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুল কুদ্দুস বলেন, গ্রামের মানুষের দাবির প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে সেতু নির্মাণ সংক্রান্ত বিষয়টি সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এখন টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি এলাকার মানুষ আশার আলো দেখবেন।

Wednesday, January 3, 2018

গুরুদাসপুরে গবাদিপশু নানা রোগে আক্রান্ত

গুরুদাসপুরে গবাদিপশু নানা রোগে আক্রান্ত

মো. রাশিদুল ইসলাম, গুরুদাসপুর (নাটোর) সংবাদদাতা
ঘন কুয়াশা। হিমশীতল বাতাশ। বাড়াচ্ছে শীতের তীব্রতা। প্রকৃতির এমন প্রতিকূল আবহাওয়া জেঁকে বসেছে গবাদি পশুগুলোর ওপর। প্রতিনিয়তই নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে হাঁস, মুরগি, গরু-ছাগলসহ গবাদিপশু। মাঠ পর্যায়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম না থাকায় ছাগলে প্লেগরোগ (পিপিআর), হাঁস-মুরগি রানী ক্ষেত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তবে গরুগুলো ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, ক্ষুরা রোগ, চর্ম রোগসহ শ্বাসকষ্ট রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এতে করে গবাদি পশু নিয়ে ঝুঁকিতে পড়েছেন খামারিসহ কৃষকরা।
গুরুদাসপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. গোলাম মোস্তফা ইত্তেফাককে বলেন, প্রচণ্ড শীতে গবাদিপশু ও পক্ষিকুল প্রাণীগুলো ঝিমিয়ে পড়েছে। শীতের কারণে গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছে। এতে ঝুঁকির কিছু নেই। খামারিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের দেয়া তথ্যমতে, গুরুদাসপুর উপজেলায় প্রায় সাতশ গরু-ছাগলের খামার রয়েছে। এসব খামারে দেশি-বিদেশি প্রায় ৯১ হাজার গরু এবং দুই লাখ ২০ হাজার ছাগল পালন হচ্ছে। এছাড়া হাঁস-মুরগির খামার রয়েছে ১৫০টি। এসব খামারে দুই লাখ ৩৬ হাজার হাঁস-মুরগি পালন করা হচ্ছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে গতকাল মঙ্গলবার গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ভুক্তভোগীরা তাদের গবাদিপশুগুলোর চিকিত্সার জন্য এনেছেন। তাদেরই একজন গুরুদাসপুর পৌরসভার আনন্দনগর গ্রামের কৃষক মকবুল শাহ। তার চারটি গরুই শীতে ঝিমিয়ে পড়েছে। বাধ্য হয়ে তিনি ডায়রিয়া আক্রান্ত একটি বাছুর গরু নিয়ে এসেছেন প্রাণিসম্পদ বিভাগে। রোগাক্রান্ত পশু নিয়ে শুধু তিনিই এসেছেন তা নয়। তারমত অসংখ্য কৃষক এবং খামারি প্রতিদিন গবাদিপশু নিয়ে ভিড় করছেন। হাসপাতালের তথ্যমতে, প্রতিদিন গড়ে ১০-১৫ জন ভুক্তভোগী মানুষ তাদের পশুর চিকিত্সা নিতে আসছেন।
উপজেলার চাঁচকৈড় পুরানপাড়া, বিলশা, খুবজিপুর, গাড়িষাপাড়া, বামনকোলা ও দড়িবামনগাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই খামারিরা গরুগুলো গোয়ালঘরে বেঁধে রেখেছেন। প্রচণ্ড শীতে এসব পশুগুলো শুকিয়ে গেছে। শীতের কবল থেকে রক্ষা করতে পশুগুলোকে চটের বস্তা জড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু গোয়ালঘরগুলোর অধিকাংশই খোলা (বেড়াহীন)। উত্তরের হিমশীতল বাতাসে পশুগুলো কাঁপছে। তার চেয়ে বেশি কষ্টে রয়েছে গৃহপালিত ছাগলগুলো। হাতে গোনা কিছু মানুষ তাদের ছাগলকে পুরাতন কাপড় পরিয়ে রক্ষার চেষ্টা করলেও অধিকাংশ ছাগলকেই যত্ন নিতে পারছে না। এসব কারণে পশুগুলো শীতকালীন নানা সমস্যায় ভুগছে।
এদিকে উপজেলার অন্তত ৮২টি খামার মালিক শীতে তাদের মুরগি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। চাঁচকৈড় তালুকদার পাড়া মহল্ল­ার মুরগির খামার মালিক আব্দুল কাদের ইত্তেফাককে জানান, শীতে তার খামারের প্রায় দেড় হাজার মুরগি ঝিমিয়ে পড়েছে। ঘন কুয়াশা আর শীত থেকে মুরগিকে বাঁচাতে খামারের চারদিকে ঘিরে রাখার পাশাপাশি ভেতরে গরম রাখতে বিদ্যুতের বাল্ব জ্বালিয়ে দিয়ে রক্ষার চেষ্টা করা হচ্ছে। তারপরও মরছে মুরগি।
তাছাড়া বিভিন্ন গাছে আশ্রয় নেওয়া বাদুর, কাক, শালিক, বকসহ পক্ষিকুল প্রাণীগুলোও শীতে ঝিমিয়ে পড়েছে। ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় পাখিগুলোর কিচিরমিচির শব্দ আর শুনতে পাচ্ছে না মানুষ। সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ বলেন, গত বুধবার সকালে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৫০টি পাখিকে অচেতন অবস্থায় বাঁশ ঝাড়ের নিচে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। পাখিগুলোর দুর্দশা দেখলে কষ্ট হয়।

Saturday, September 23, 2017

চলনবিলে ৫০ হাজার ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী নারী-পুরুষের কাজ নেই

চলনবিলে ৫০ হাজার ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী নারী-পুরুষের কাজ নেই

মোঃ রাশিদুল ইসলাম, গুরুদাসপুর (নাটোর) সংবাদদাতাঃ নজঙ্গল ঘুরে শিয়াল-বেজি, খরগোস-কচ্ছপসহ নানান বন্যপ্রাণী নিধন করেই চলতো তাদের জীবিকা। সময়ের ব্যবধানে বন-বাদার উজাড় হয়েছে। বন্ধ হয়েছে জীবিকার সেই পথ। বেঁচে থাকার তাগিদে তারা বেছে নিয়েছে কৃষি কাজ। বর্ষায় ডুবে যাওয়া চলনবিলে সেই কৃষি কাজও এখন নেই বললেই চলে।
যা আছে তা চাহিদা মেটানো হচ্ছে স্থানীয় শ্রমিক দিয়েই। এতে চলনবিলে বসবাসরত ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীরা কাজ পাচ্ছে না। ফলে চলছে না তাদের সংসার। তাই কষ্টে-অনাহারে-অর্ধাহারে-অপুষ্টিতে ভুগছে তারা। জীবন বাঁচাতে অনেকেই আবার মহাজনী ঋণ ও আগাম শ্রমবিক্রি করছেন। কেউ কেউ ঝাড়ু-খেজুর পাতার পাটি বিক্রি করছেন। কিছু সংখ্যক মহিলা উঁচু এলাকায় গিয়ে সীমিত মজুরিতে কাজ করছেন। তাতেও সংসার চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। এভাবে কষ্টে জীবন যাপন করছেন প্রায় ৫০ হাজার ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর নারী-পুরুষ।  
ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী নেতাদের দাবি, বর্ষাকালীন সময়ে অবহেলিত এই জনগোষ্ঠীকে ভিজিডি, ভিজিএফ, বয়স্ক ভাতার সুবিধা প্রদানসহ বিশেষ কর্মসূচির আওতায় এনে পুনর্বাসন করা। অন্যথায় এসব জনগোষ্ঠীর মানুষগুলো অভাব মেটাতে নানারকম অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পড়তে পারে।
আদিবাসী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চলনবিলের গুরুদাসপুর, সিংড়া, তাড়াশ, রায়গঞ্জ উপজেলা এলাকায় প্রায় ৫০ হাজার ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী বসবাস করে। এদের মধ্যে উড়াও, মাহাতো, রাজবংশী, বিদাস, কনকদাস ও স্বল্প সংখ্যক সাঁওতাল ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী নারী-পুরুষ রয়েছে। এক সময় এসব সমপ্রদায়ের নারী-পুরুষ বনজঙ্গলে ঘুরে শিয়াল, খরগোস, বেজি, কচ্ছপসহ নানা ধরনের প্রাণী নিধন করে জীবিকা নির্বাহ করতো। সময়ের ব্যবধানে বন-বাদার উজাড় হয়ে পড়ায় তাদের জীবিকার পথ বন্ধ হয়ে পড়ে।
পরে সংসার চালাতে জীবিকা হিসেবে তারা ধান লাগানো, কাটা, মাড়াই, ইটভাটায় শ্রম দিয়ে জীবিকা নির্বাহের পথ বেছে নেয়। কঠোর পরিশ্রমী, সহজ-সরল আর অপেক্ষাকৃত কমদামে শ্রমিক পাওয়ায় এ অঞ্চলে ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীদের চাহিদা অনেক বেশি।
হেমন্ত ও শরতে ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীদের এলাকায় কাজ থাকে না। এ সময় মাঠে পাকা ধান কিংবা ইটভাটায় ইট তৈরির কাজ এবং কৃষকের বাড়িতে শ্রমিকের কাজ থাকে না। এ অঞ্চলের ৮০-৮৫ ভাগ ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী কৃষি শ্রমজীবী। কৃষি শ্রম বিক্রি করেই তাদের সংসার পরিচালনা করতে হয়। কাজ না থাকায় অর্থ সংকটে পড়ে বর্তমানে তারা আগাম শ্রম বিক্রি শুরু করেছেন।
সম্প্রতি সরেজমিনে চলনবিলে গিয়ে দেখা যায়, ৫/৬ জন ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী মহিলা চলনবিলের মাঠঘাট থেকে বিন্নার ফুলকা, আবার কেউ কেউ বিভিন্ন গাছ থেকে খেজুরের পাতা সংগ্রহ করছেন। ওই দলের অনিমা উড়াও ও রুপালী কেরকাটা জানান, তাদের বাড়ি তাড়াশ উপজেলার মাধাইনগর গ্রামে। তাদের কাজ না থাকায় জীবিকা হিসেবে এগুলো সংগ্রহ করছে। বাড়িতে নিয়ে ঝাড়ু ও খেজুর পাতার পাটি তৈরি করে বিক্রির পর চালসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনবেন। 
সরেজমিনে আরো দেখা যায়, গুরুদাসপুরের ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর নারীরা উঁচু এলাকায় গিয়ে সীমিত মজুরিতে ধান রোপণের কাজ করছেন। সেখানে কর্মরত শ্যামলী রানী ও কুমারী আল্পনা রানী জানান, সকাল থেকে ৪টা পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন শ্রম দিয়ে তারা মজুরি পাচ্ছেন ১৫০ থেকে ২শ টাকা। তাতে কোনো রকমে বেঁচে রয়েছেন। গুরুদাসপুরের চাপিলা গ্রামের কৃষক বদরউদ্দিন জানান, কাজ না থাকায় শ্রমজীবী ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর নারী-পুরুষদের নিকট থেকে সহজ শর্তে তিনি আগাম শ্রম কিনেছেন।
আদিবাসী ফাউন্ডেশনের (তাড়াশ) সভাপতি বলেন, তাড়াশ এডিপি ওয়ার্ল্ড ভিশন নামে একটি বেসরকারি সংস্থা ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে হাঁস-মুরগি, ছাগল, গাভী পালন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থানসহ পরিবারের আয়মূলক কর্মকাণ্ডের জন্য বিভিন্ন ধরনের অনুদান ও ঋণ প্রদান করত। কিন্তু গত প্রায় পাঁচ বছর ধরে এনজিও নির্ভর সহযোগিতা অনেকটাই বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর নর-নারীদের আগাম শ্রম বিক্রির প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
নাটোর জেলা জাতীয় আদিবাসী পরিষদ সভাপতি রমানাথ মাহাতো বলেন, গুরুদাসপুর ও সিংড়া উপজেলা এলাকার আদিবাসীদের ঘরে ঘরে অভাব চলছে। গুরুদাসপুরের চাপিলা ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন ভুট্টু বলেন, গুরুদাসপুরে বসবাসরত ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীদের ভিজিডি ভিজিএফয়ের আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে।

Wednesday, September 20, 2017

নাটোরের লালপুরে চালের গোডাউনে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান; অবৈধভাবে মজুদ রাখা ১’শ টন চাল জব্দ, ৭ টি গোডাউন সিলগালা, একজনকে এক বছরের কারাদন্ড

নাটোরের লালপুরে চালের গোডাউনে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান; অবৈধভাবে মজুদ রাখা ১’শ টন চাল জব্দ, ৭ টি গোডাউন সিলগালা, একজনকে এক বছরের কারাদন্ড

শাকিল আহম্মেদ নাটোরঃ নাটোরের লালপুরে অবৈধ ভাবে মজুদ রাখায় এক’শ মেট্রিক টন চাল জব্দ করে ৭টি গোডাউন সিলগালা করেছে ভ্রাম্যমান আদালত। এসময় চাল মজুদ রাখার অপরাধে চান্দু মিয়া (৬৫) নামের এক ব্যবসায়ীকে এক বছরের কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। দন্ডপ্রাপ্ত চান্দু মিয়া উপজেলার গোপালপুর পৌরএলাকার আজিমুদ্দিনের ছেলে। মঙ্গলবার দিনভর এই অভিযান পরিচালনা করেন, নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোর্তুজা খান।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, চালের বাজার অস্থিতিশীল ঠেকাতে অবৈধ ভাবে মজুদদারদের বিরুদ্ধে মাঠে নামে জেলা প্রশাসন। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার লালপুর উপজেলার গোপালপুর বাজারে অভিযান চালায় ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোর্তুজা খান। এসময় মাত্র ১৫টন চাল বিক্রির অনুমতি থাকলেও ৭টি গোডাউনে মোট ১১৫ মেট্রিক টন চাল মজুদ করে রাখে সে। পরে ১০০টন চাল অবৈধ ভাবে মজুদ রাখায় জব্দ করা হয় চালগুলো। এসময় অবৈধভাবে মজুদের অভিযোগে মালিক চান্দু মিয়াকে এক বছরের কারাদন্ড প্রদান করা হয়। এসময় ভ্রাম্যমান আদালতের সাথে র‌্যাব-৫ নাটোর ক্যাম্পের কমান্ডার শেখ আনোয়ার হোসেন, জেলা বাজার মনিটরিং কর্মকর্তা নূর মোমেন, জেলা কনজুমার এস্যোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রইস উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

Tuesday, September 19, 2017

নাটোরের গুরুদাসপুরে চালের ব্যবসায় তেলেসমাতি,৪ মোকাম মালিককে আড়াই লক্ষাধিক টাকা জরিমানা

নাটোরের গুরুদাসপুরে চালের ব্যবসায় তেলেসমাতি,৪ মোকাম মালিককে আড়াই লক্ষাধিক টাকা জরিমানা

স্থানীয় প্রতিনিধি: নাটোর জেলার সর্ববৃহৎ চালের মোকাম গুরুদাসপুরের চাঁচকৈড় বাজারে অভিযান পরিচালনা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় সিন্ডিকেট করে চাল মজুদ ও অতি মুনাফায় বিক্রির অভিযোগে ৪ মোকাম মালিককে ২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নাটোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাজ্জাকুল ইসলাম এ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোর্তজা খান,  র‌্যাব-৫ এর এএসপি (সিপিসি-২)  শেখ মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন,  জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. মনিরুল ইসলাম,  জেলা বাজার কর্মকর্তা মো. নূর মোমেন, কনজ্যুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের নাটোর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. রইসউদ্দির সরকারসহ এক প্লাটুন র‌্যাব সদস্য।
জানা যায়, মোটা চাল চিকন করে মিনিকেট নামে বাজারজাতকরণ, ওজনে কম দেয়া,  অবৈধ ট্রেড মার্ক ব্যবহার, বস্তায় উৎপাদনের তারিখ ও বিক্রয়মূল্য না লেখা,  খাদ্য বিভাগের কাছে প্রতিবেদন দাখিল না করায় ও চাল মজুদ করে অতি মুনাফায় বিক্রি করায় তাদের জরিমানা করেছে।
এ বিষয়ে নাটোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাজ্জাকুল ইসলাম জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালতে দোষী  সততা এন্টারপ্রাইজের মালিক  মো. রায়হানউদ্দিনকে ৭০ হাজার,  চৌধুরী ট্রেডার্সের কিশোর কুমার চৌধুরী ও জাহাঙ্গীর অটো রাইস এজেন্সির মালিক মো. জাহাঙ্গীর আলমকে ৫০ হাজার করে ১ লাখ এবং ভাই ভাই এন্টারপ্রাইজের মালিক হাজী আলমগীর কবিরকে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়।
র‌্যাবের এএসপি শেখ আনোয়ার হোসেন জানান, কোন অসাধু ব্যবসায়ী চালের বাজার নিয়ে চালবাজি বা তেলেসমাতি করার চেষ্টা করলে কোনো প্রকার ছাড় দেয়া হবে না। চালের বাজার অস্থির করে তোলার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।