Saturday, January 6, 2018

১০ গ্রামের মানুষের ভরসা গুরুদাসপুরে বাঁশের সেতু

মোঃ রাশিদুল ইসলাম, গুরুদাসপুর (নাটোর) সংবাদদাতা
২৫০ মিটারের একটি বাঁশের সেতু। এই সেতু দিয়েই যাতায়াত করেন কয়েক হাজার মানুষ। ঘাটটি ডাক হওয়ার পর আত্রাই নদীর ওপর সেতুটি নির্মাণ করেছেন স্থানীয় খোকন মাঝি নামের এক ব্যক্তি। সেতুতে পারাপারের জন্য টোল বাবদ দিতে হচ্ছে ফসল অথবা টাকা। গুরুদাপুর উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের সাবগাড়ি আদর্শ বাজার সংলগ্ন আত্রাই নদীর ওপর ওই বাঁশের সেতুর অবস্থান। বর্ষায় নৌকা আর শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সেতুতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ আশেপাশের ১০ গ্রামের মানুষ। স্থানীয়রা জানান, আত্রাই নদীর পূর্বপাড়ে ফকিরপাড়া, বিলহরিবাড়ি, হরদোমা, সাবগাড়ী, কৃষ্ণনগর গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষর বসবাস। এছাড়া প্রাথমিক স্কুল, মাদ্রাসা ও বিলহরিবাড়ি কবরস্থান রয়েছে। পশ্চিম-দক্ষিণ পাড়ে রয়েছে বিয়াঘাট, সাবগাড়ি, বিলদহর ও জ্ঞানদা নগর গ্রাম ছাড়াও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও সাবগাড়ী হাট রয়েছে। আত্রাই নদীর দুই পাড়ের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ ওই বাঁশের সেতুর ওপর  প্রত্যক্ষ ও পরেক্ষভাবে নির্ভশীল। ওই নদী পার হয়ে দুই পাড়ের মানুষ এসব প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে। এছাড়া পূর্ব পাড়ের মানুষের জেলা শহরসহ বিভিন্ন এলাকার সাথে যোগাযোগ রক্ষাকারী মাধ্যমও এটি। তাছাড়া ইরি-বোরো রবিশস্য আবাদ শুরু হওয়ায় পারাপারে চাপ বাড়ছে।
দেখা যায়, নদীটির এপার ওপার জুড়ে বাঁশের সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। মাঝামাঝি পর্যায়ে খানিক জায়গা রেখে সেখানে নৌকা রাখা হয়েছে। ফসলাদি নিয়ে মানুষ ঝুঁকি নিয়েই পারাপার হচ্ছেন। স্থানীয় খোকন মাঝি নামের এক ব্যক্তি খেয়াঘাটটি ইজারা নিয়েছেন। সেতুতে পার হতে স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষেত্রে সদস্য অনুপাতে আধা মণ থেকে একমণ হারে ধান নেওয়া হয়। এছাড়া দূরের এলাকা থেকে আসা মানুষের ক্ষেত্রে বাইসাইকেল দুই টাকা, মোটরসাইকেল পাঁচ টাকা ও মানুষ পারাপারের ক্ষেত্রে পাঁচ টাকা করে নেওয়া হয়।
খোকন মাঝি জানান, ভরা বর্ষায় নৌকায় মানুষ পারাপার করা হয়েছে। এখন পানি কমে যাওয়ায় গ্রামবাসীর কাছ থেকে চাঁদা তুলে এক লাখ ২০ হাজার টাকা ব্যয়ে ২৫০ মিটারের বাঁশের সেতুটি নির্মাণ করেছেন তিনি।
দুর্গাপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ওমর আলী বলেন, নদীর ওপর সেতু না থাকায় পূর্ব পাড়ের বাসিন্দারা বেশি কষ্টে আছেন। প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হয়ে শিক্ষার্থীরা স্কুল-কলেজে আসে। তাছাড়া এখানকার মানুষের নিত্য কেনা-কাটা, জমির ফসল উত্পাদন-বিক্রি ও দেশের অভ্যন্তরে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হয়ে উঠেছে ওই বাঁশের সেতু।
বিয়াঘাট ইউপি চেয়ারম্যান প্রভাষক মোঃ মোজাম্মেল হক বলেন, দেড়বছর আগে সাবগাড়ি বাজারে সেতুর দাবিতে একটি বৈঠক হয়েছিল। সেই বৈঠকের দাবি সংবলিত একটি কপি স্থানীয় সংসদ সদস্যকে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুল কুদ্দুস বলেন, গ্রামের মানুষের দাবির প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে সেতু নির্মাণ সংক্রান্ত বিষয়টি সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এখন টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি এলাকার মানুষ আশার আলো দেখবেন।

SHARE THIS

0 comments: